ঢাকা: বাজারে স্বস্তি ফেরাতে বেশকিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরেও বেড়ে চলেছে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম। এমনকি আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার পরেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আলু ও পেঁয়াজের বাজার। আমদানিকৃত ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বাজারে আসলেও তা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ও পেঁয়াজের কোনো সংকট না থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যে দামে তারা পাইকারি পণ্য কিনছেন, ওই অনুপাতে মুনাফা রেখে খুচরা বিক্রি করছেন। হিমাগার গেটে আলুর দর বৃদ্ধির কারণেই খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে।
কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। এ ছাড়া মিশরীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও থাই পেঁয়াজের কেজি ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবি’র হিসেবে গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দর ২১.৭৪ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে ৬ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে পেঁয়াজ আমদানির ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক এবং রেগুলেটরি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে উল্লেখ করা হয়, পেঁয়াজের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে আমদানি পর্যায়ে থাকা মোট করভার ১০ শতাংশের পুরোটাই প্রত্যাহার করা হলো।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। পাইকারি বাজারে আলুর দাম ৬৬ টাকা। তবে বাজারে আমদানিকৃত কোনো ধরনের আলু চোখে পড়েনি। টিসিবি’র হিসেবে গত এক মাসে আলুর দর ২৭.২৭ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি দেশে আলুর দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে গত সপ্তাহ থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথমদিকে দুই থেকে তিন ট্রাক আমদানি হলেও এখন পরিমাণ বেড়ে ১০ থেকে ২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। বন্দর দিয়ে ডায়মন্ড ও কাটিনাল- এই দুই ধরনের আলু আমদানি হচ্ছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার রেকর্ড সংখ্যক ৭১টি ট্রাকে ১ হাজার ৮১৮ টন আলু আমদানি হয়েছে। গত ৫ই সেপ্টেম্বর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়।
এ ছাড়া বাজারে দেশি রসুন ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানিকৃত চায়না রসুন ২২০ টাকা কেজি। এ ছাড়া আমদানিকৃত ইন্ডিয়ান আদা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং চায়না আদা ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে কৃষিপণ্য। এর মধ্যেও রোজা শুরুর ৪ মাস আগেই সিন্ডিকেটের কারসাজিতে রোজা নির্ধারিত পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।