ঢাকা: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
আদেশে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ১৫ অক্টোবর বিচারপতি গোলাম মর্তুজাসহ বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে যোগ দেন।
এর আগে ১৪ অক্টোবর সরকার বিচারপতি গোলাম মর্তুজাকে চেয়ারম্যান এবং বিচারপতি শফিউল আলম ও মহিতুল ইসলামকে সদস্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে।
গত ৮ অক্টোবর হাইকোর্টে নিয়োগ পাওয়া ২৩ জন অতিরিক্ত বিচারকের ভেতর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা ও বিচারপতি শফিউল আলমও আছেন।
আগের মাসে প্রসিকিউশন টিম এবং ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা-দুটিই সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার বিচার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই গণঅভ্যুত্থানে অন্তত দেগ হাজার জন নিহত ও হাজার হাজার মানুষ আহত হন। দৃষ্টিহীন হন কয়েক হাজার মানুষ।
এ পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও তার দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে আইসিটি তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিমের কাছে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ৬০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।
তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম এরই মধ্যে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন-১৯৭৩ সংশোধনের জন্য একটি খসড়াও তৈরি করেছে সরকার।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে।