চট্টগ্রাম: সাবেক তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং চট্টগ্রামের ২৮ সাংবাদিকসহ মোট ১০৯ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ চেষ্টা, আক্রমণ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে চট্টগ্রামে একটি মামলা হয়েছে।
আজ বুধবার মোহরা সায়রা খাতুন কাদেরিয়া গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক হাসিনা মমতাজ মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে এ মামলা করেন।
আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বা সহকারী পুলিশ সুপারের সমপর্যায়ের কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এছাড়া, ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন-সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর মা এবং চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, দৈনিক আজাদীর শুকলাল দাশ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সময় টিভির প্রমল কান্তি দে কমল, ইনডিপেনডেন্ট টিভির অনুপম শীল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আজহার মাহমুদ, বাংলানিউজ২৪ডটকমের তপন চক্রবর্তী, ফটোগ্রাফার উজ্জ্বল কান্তি ধর; বিএফইউজে নেতা কাজী মহসিন, একুশে টিভির একরামুল হক বুলবুল, সারাবাংলাডটনেটের রমেন দাশ গুপ্ত, বিডিনিউজ২৪ডটকমের সাংবাদিক মিন্টু চৌধুরী ও উত্তম সেন গুপ্ত, সমকালের কুতুব উদ্দিন, দীপ্ত টিভির রুনা আনসারি, একুশে টিভির রফিকুল বাহার, ডিবিসি নিউজের মাসুদুল হক, বিশ্বজিৎ রাহা, ভোরের কাগজের সমরেশ বৈদ্য এবং সিপ্লাসের শৌরভ ভট্টাচার্য।
এছাড়া, আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি এবং অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতা কর্মীসহ আরও ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী হাসিনা মমতাজ বলেন, “আমরা ৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় ছিলাম। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছিল। আমি তখন ভিডিও করছিলাম। তারা সেখানে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। আমার স্বামী আহত হন।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে সব সাংবাদিকদের চিনি না। সাংবাদিকদের নামগুলো বিক্ষোভকারী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া।”
মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় প্রকৃত ঘটনা গোপন করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করেন। ৪ আগস্ট বাদী যখন নিউমার্কেট এলাকায় ছিলেন, তখন সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলি ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা গলিতে লুকানোর চেষ্টা করলে, সাংবাদিকরা তাদের মারধর করে এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে তুলে দেয়।
মামলার বিবরণীতে আরও বলা হয়, সাংবাদিকরা প্রকৃত ঘটনাগুলো রিপোর্ট না করে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছেন। অভিযুক্তরা বাদীকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তিনি নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।
সাংবাদিকদের নাম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমাদের অনেক সহযোদ্ধারা অনেক ঘটনা দেখেছেন। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও করেছেন। যিনি মামলা করেছেন তিনি তার জায়গা থেকে মামলা করেছেন। ফেসবুক থেকে দেখে তিনি নাম নিতে পারেন।”