ভয় ভেঙে যাচ্ছে
মন থেকে ভয় উঠে গিয়ে শুধু ঘৃণা
দ্যা প্রিন্স বলেছে কি না
ভেঙে পড়বে ভয়ের শাসন তীব্র ঘৃণায়
গোক্ষুর নাচছে ওঝার বীণায়
সহসা ঘটে যাবে কি-না কিছু
ভয় হাঁটে পিছু পিছু
দ্বিধা ও শঙ্কায় কাঁপে বুক
আরোহনে সে কী সুখ!
অবরোহনের তরু
দমনের পরও ফের শুরু!
চেকার,গেস্টাপো,লাল নীল ঈগল বাহিনী
রোধ করতে পারেনি অনিবার্য পতন কাহিনী
সময়ের স্রোতে ভেসে আসে ভয়ার্ত
হিটলার, মুসোলিনি, পল পট, সোহার্ত
স্টালিনের মুখ;
নরহত্যার সুখ
উপভোগ করেছিল তারা।
যারা ছিল ভীতু গৃহহারা
তাদেরও ভাঙছে ভয়
নিপীড়িত মানুষের জয়!
হবে হবে নিশ্চয়।
কাঁধে নিয়ে নাচি
কেউ কেউ উদোম হচ্ছে একী!
কারো কারো ঢাকার প্রয়াস দেখি।
আখেরে প্রকাশিত হলো সব ঝাড়ি
হায় হায়!এ দেখি মলম পাট্টির তাড়ি?
মহারাষ্ট্রের পল্লীতে বোনে টাঙ্গাইল শাড়ি
নিম ও ইলিশের স্বত্ব খুঁইয়েছে রাধা
তলে তলে কতকিছু দে'য়া হচ্ছে বাঁধা!
শাড়ি খুলে বাড়ি ফেরে করিমন
ভিটায় চড়ছে ঘুঘু-ধুধু বন।
হরিদাস ফিরে এসে বসে গেছে ঠায়
মাথায় পড়েছে বাড়ি হায় হায়।
একে একে লাটে ওঠে বস্ত্র ও পাট
তবু দেখি টিকে আছে বাঙালির ঠাট।
হাঁটু ভেঙে পড়ে যায় দেশ
করতালি দিয়ে ব'লে শেষ শেষ!
কামারের হাপরের মতো ওঠে নামে বুক
চেন্নাই চলে যাও তোমার অসুখ।
কী হবে? বুক চাপড়াও থাপড়াও
ধামরাই গিয়ে টান রথ
কলা চিড়া-দই লটকন বেচ
তুমি সৎ বাঁচার তো এই পথ।
ঘরে ঘরে কালিপুজা হোক- ঢাকে বাড়ি
খোল লুঙ্গি তাড়াতাড়ি
কারণেই নেশা হলো বেশ।
উল্কির জামা পরা নারী
নাচে, গায় হরে কৃষ্ণ হরে রাম
গঞ্জিকা সেবনেই ফুরিয়েছে কাম।
এদিকে আমার ঘরে আমি পরবাসী
মাসী, ও মাসী ভাদ্রের ত্যাড়াব্যাড়া শেষ
তালের বড়াটরা কিছু দাও-খেতে লাগে বেশ।
সাথে তাড়ি, নাচি ধেই ধেই শম্ভু
পশ্চাৎ দেশে তোকে দিব বাম্বু।
এইটুকু শুনে বলেদিলি চণ্ডাল!
গালি দিবো-পার যদি ছেঁড় বাল।
কাল দেখা হবে কাল দেখে নিব তোরে
বকুল তলার মোড়ে।
এখন নাচতে দাও কাঁধে সতী বাংলাদেশ
সুদর্শন চক্র হাতে -বলো সবে বেশ বেশ।
নর্তনে কী যে সুখ !
টের পাই গভীর অসুখ।
বিশল্যকরণী
শুধু কী রাতেই নামে অন্ধকার?
দেশ জুড়ে হাহাকার
নেমেছে আঁধার
তুমি কার কে তোমার?
এই দেশ এই দিন
তোমার আমার।
কালনাগিনীটি দংশিল ভালে
বিশল্যকরণী কে আনবে একালে?
আমাদের রাতদিন একাকার
নেমেছে আঁধার ;
হাহাকার হাহাকার!
ভানু গেছে হনুর বগল তলে
সব লোকে এই কথা বলে!
আমি জানি তুমি জান খুব
থাক চুপ দাও ডুব
অভাব সাগরে;
কান্নার রোল ঘরে ঘরে।
কার কাছে বাতি
কে ধরেছে ছাতি?
সবই জানা
হায়!রাতকানা!
গন্ধমাদনে খুঁজে পাবে কী বিশল্যকরণী?
মানি সবই মানি
নিভৃতে কেঁদে মরে বিচারের বাণী।
কালবেলা
হাতভাঙা গ্রাম থেকে হাঁটুভাঙা
এসেছে সবুজ শাড়ি
হলুদ রেণুতে ডুবে মৌমাছি
মধুময় স্বপ্নে বিভোর ছিল
মক্ষীরানি বলেছেন দিবে;
দোকানির নষ্টচোখে ঝোলাগুড়,
জবাফুলে বসেছে ভোমরা;
মৃণাল কান্তি ভাবে
নৃমুণ্ডমালিনীরে পুজো দিয়ে
কেন সে হারবে!
যৌবনে মৌবনে কত-না
বসেছে ফুলে-আজ ভেবে বলে
এখন সন্ধ্যাবেলা তবু কেন দিতে হবে কালি ঘাটে পুজো?
পাণ্ডারা সান্ডার তেল মেখে ঘিরে আছে তাকে!
কার দোষে চিনে জোক রক্ত পিয়ে
মোটা হ'ল শেষে?
বল হরিবোল - বলহরি সমস্বরে চিতা ঘাটে।
আজও সরিষার তেল নিয়ে বাড়ি ফিরে
দোকানিরে গালি দেয় বধূ ?
পেঁয়াজের ঝাঁঝে চোখে জল আসে
ঢাকা থেকে ফেরে নাই স্বামী
এই দায়ভার শাশুড়ী দিয়েছে তাকে ;
বলে, মাগী তুই ভাতারখাগিনি
নাঙ্গ মারাবারে যাস ভিন গাঁয়ে?
ধুলায় অন্ধকারে কে কারে মেরেছে
এই নিয়ে লেখা হয় সমাচারে;
চাল ডাল নুন তেল পেঁয়াজ রসুন বেচে
মোটাতাজা সাহুর পোলাডা
সরিষার ক্ষেতের জমিনে
কামিনীরে আকাশের দিকে মুখ করে
শেষবেলা চাঁদ দেখিয়েছে এই বলে:
ঘটক পাঠাবো কাল ভোরবেলা।
প্রতিশ্রুতি ভাঙা নিয়ে শালিস বসেছে
দশ গ্রাম থেকে দশ মোড়ল এসেছে
এই গাঁয়ে লেগেছে গ্রহন, কালবেলা।