ভারতের সেনাবাহিনীর একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি সংস্থার হাতে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর নয় এমন সামরিক ঘাঁটির সুরক্ষা, অস্ত্র এবং যন্ত্রাংশের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি, জওয়ানদের জন্য খাবার রান্না সহ বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে ভারতজুড়ে।
সেনাবাহিনীর বক্তব্য, বাহিনীর ‘অপারেশনাল এজ’ বা সামরিক ধার বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ, কেবলমাত্র সামরিক কাজের জন্যই জওয়ান নিয়োগ করা হবে বাহিনীতে। বাকি কাজ চালানো হবে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া কর্মীদের দিয়ে।
ভারতীয় সেনার জওয়ান এবং অফিসারদের বিভিন্ন বিদেশি ভাষা শিখতে হয়। এতদিন সেই তালিম দিতেন সেনা অফিসার কিংবা জওয়ানরা। এবার থেকে ভাষা শিক্ষার জন্য বাহিনীর বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যেই টেরিটোরিয়াল আর্মির তরফে চীনা ভাষার প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে আলাদা করে। সাইবার বিশেষজ্ঞদেরও একই কায়দায় নিয়োগ করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি সেনা হাসপাতালে খাবার রান্না, পরিবেশন এবং জঞ্জাল পরিষ্কার করার জন্য বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, ফিজিওথেরাপিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্টও প্রয়োজনমত বাইরে থেকে নিয়োগ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়ির চালক, আর্মি স্টোরের পণ্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আগে এই সমস্ত দায়িত্ব পালন করতেন সামরিক বাহিনীর কর্মীরাই। কিন্তু বর্তমানে ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাহিনীর আয়তন কমাতে চাইছে। তাই কোপ পড়ছে এই সমস্ত ক্ষেত্রের শূন্যপদে।
সংশ্লিষ্ট অংশের বক্তব্য, এই মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে ভারতের ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পেও। এই প্রকল্পের হাত ধরে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে সেনা জওয়ান। একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শহীদ হওয়ার পরে উপযুক্ত মর্যাদা দেওয়া হয়নি ‘অগ্নিবীর প্রকল্প’-র মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া জওয়ানদের। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও তারতম্য রয়েছে দুই ধরণের সেনা জওয়ানের মধ্যে।
স্থায়ী পদে নিয়োগের থেকে অনেক কম বেতন ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে। এবার ‘আউটসোর্সিং’ করে সেনার নিয়মিত দায়িত্বও বেসরকারি হাতে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে সরকারি বেতনের চেয়ে অনেক কমে অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী দিয়ে কাজ করাবে ঠিকাদার সংস্থা।