শব্দের ভেতর থেকে একটি চটুল শব্দ
উদ্যান নাড়াবে এই প্রত্যাশায় ছুঁয়ে দিল তোমার শরীর
সহসা তুমি কেঁদে ওঠো
পতাকা-শোভন মুখ আহা! কি যে অসহায়
মুহূর্তেই জ্বলে উঠে তা স্পর্শের আগুনে।
বেহিসেবী বনপোড়া শব্দটি কেন যে এমন করে
অচেনা তোমাকে ছুঁলো তুমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়
এবং পরক্ষণেই হঠাত্ তোমার মুখ হলো আলোকিত
তুমি প্রসারিত করলে দুহাত
এবং উদ্যানটি তোমাকে চুমু খেতে খেতে হলো যে মাতাল।
দেখতে দেখতে তুমি আর উদ্যান একাকার হয়ে গেলে।
তুমি চুমু খেলে উদ্যানকে আর উদ্যান তোমাকে।
এবং হঠাত্ শব্দের মধ্যে উড়তে উড়তে মিশে গেলে হাওয়ায়।
অদৃশ্য আততায়ী
আমার চারপাশে এক অদৃশ্য আততায়ী
ঘুর ঘুর করে সারাক্ষণ
বিশালাক্ষীর ধারালো ছুরি উঁচিয়ে
অনাহুত এই আগন্তুক মরণছোবল দেবে বলে
বেস্টনি তৈরিতে বিভোর।
আমি স্পষ্ট দেখতে পাই তাকে
এই বুঝি আমাকে নিঃশেষ করে দেবে
ভেবেই সতর্কতার অনুভবে ভিজাই শরীর।
কর্মের মাঝে যে জীবন তাকে কেন যে
বারবার বাধার দেয়াল ফেলে আটকিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর,
কেন যে বারবার বৃত্তাকারে কুণ্ডলি পাকিয়ে গ্রাস করতে চাও
এ কথা ভেবেই তাকিয়ে থাকি আমার পূর্ব পুরুষের মুখের দিকে
মাঝে মাঝে ভাবি যদি আমি হারিয়ে যাই এই কোলাহলমাখা শহর থেকে
শহর কি আমাকে দেখতে আসবে?
যে মা প্রতীক্ষায় রাতগুণে সারাক্ষণ
যে মা জায়নামাজ ভিজায় সন্তানের মঙ্গল কামনায়
সেই মমতাময়ী মা কি আমাকে পারবে দেখতে
আমার অবুঝ সন্তান, স্ত্রী, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব?
তবু আমাকে দাঁড়াতে হবে, আমাকে বাঁচতে হবে
হে অনাহুত আগন্তুক তোমাকে দোহাই আমার প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর
তোমাকে দোহাই গাউস-কুতুব, পীর-আওলিয়া, মণি-ঋষি বন-জঙ্গল, গাছ-গাছালি
তোমাকে দোহাই ফকির, মিসকিন, পাগল, কবি,
তোমাকে দোহাই-তুমি চলে যাও, তুমি দূর হও
পথ আর কণ্টাকাকীর্ণ করে রেখো না, বেষ্টনি সরিয়ে ফেল
কুসুমাস্তীর্ণ যে পথ ছিল আমার স্বর্গ
সেই পথে নির্দ্বিধায় হেঁটে যেতে পারি গন্তব্যে
হায় জীবন এ কোন্ আন্ধার কাল এসেছে
পৃথিবীতে নিভৃতে রাজকন্যা এক
ঘরের ভেতর বসে যে খেলে আগুনের খেলা
তার সাথে হয়নি দেখা আজও। সর্বক্ষণ নীরবেই
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দগ্ধ করে আমাকে।
এই যে অহোরাত আগুন খেলায় মত্ত সে
অথচ তাকে আজও হয়নি জানা
কে সে? সে কি কোনো এক মানবী?
তবে কেন আজও দেয়নি ধরা। গোপনেই কি তবে
আগুন উত্তাপে পোড়াবে আমাকে।
মাঝে-মধ্যে লেলিহান উত্তাপে অস্থির আমি
ভাঙি দরজা-কপাট। সহসা সে যেনো মিশে যায়
লজ্জাবতীর মতো ঘরের ভেতর।
খুঁজেও পাইনি তাকে খুঁজে খুঁজে উপায়ান্তর না পেয়ে
অবশেষে অস্থির অগ্নিতে পোড়াই নিজেকে এবং
অনুভবে ছেড়ে দিয়ে জল-কল ভিজাই শরীর।।