রংপুর: রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাহামুদুল হাসান মুন্না নিহতের ঘটনায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার ছেলেসহ ১২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৫০০-৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালী আমলি আদালতে মামলাটি করেছেন মুন্নার বাবা আবদুল মজিদ।
মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ছাড়াও তার ছেলে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুজ্জামান আহমেদ, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মতিয়ার রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সফুরা খাতুন ও রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলসহ ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ৩ আগস্ট প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেন যে, সারাদেশে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। ওবায়দুল কাদেরের ওই ঘোষণা মোতাবেক এক থেকে পাঁচ নম্বর আসামির নেতৃত্বে লালমনিরহাট থেকে ১০-১৫টি বাসে অন্যান্য আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জন আসামি ছয় নম্বর আসামির আহ্বানে ডাকা রংপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত কর্মসূচিতে যোগ দেয়। ছয় নম্বর আসামির ডাকা ওই কর্মসূচিতে রংপুরের অন্যান্য আসামিরাও যোগ দেয়।
ঘটনার দিন ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাহামুদুল হাসান মুন্না তার বাবার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে কাউনিয়া উপজেলার বরুয়াহাট এলাকার বাড়ি থেকে আসার সময় পথিমধ্যে রংপুর শহরের মিনি সুপার মার্কেটের পাশে ভাঙ্গা মসজিদের সামনে পৌঁছালে এক থেকে ছয় নম্বর আসামির নেতৃত্বে সাত থেকে ১২৮ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জন আসামি ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা করে।
আসামিদের হামলার মুখে ছাত্র-জনতার মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন ওই স্থান পার হওয়ার সময় এক থেকে ছয় নম্বর আসামির নেতৃত্বে সাত থেকে ১২৮ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জন মাহামুদুল হাসান মুন্নাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলকারী মনে করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন মুন্না। সেই সময় অজ্ঞাতনামা দোকানদাররা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে কিছুক্ষণ পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে (হারাগাছা থানা) নির্দেশ দিয়েছেন।