রাজশাহী: ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চ করেছে বিএনপির তিন সংগঠন। রোডমার্চের দ্বিতীয় দিন বগুড়া থেকে শুরু করে রাজশাহীতে গিয়ে শেষ হয়। প্রায় ১২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে চারটি পথসভাসহ ছয়টি স্থানে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
দুইদিনের রোডমার্চ শেষে রাজশাহী ঈদগা মাঠে সমাপনী সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে অস্তিত্বের প্রশ্ন, স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে কিনা প্রশ্ন, গণতন্ত্র ফিরে আসবে কিনা প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আদালত, সংসদ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা করতে গিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে খুন, গুম করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছে। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। খালেদা জিয়া জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “মানুষ জেগে উঠেছে, রাজপথে নেমেছে। রাজপথে এই সরকারকে পতন ঘটিয়ে ঘরে ফিরবো। আওয়ামী আবারও নির্বাচন নিয়ে পাতানো খেলা খেলতে চায়। আমরা নির্বাচন নিয়ে পাতানো খেলা খেলতে দেবো না।”
ডিসি-এসপি পরিবর্তন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই রাজশাহীতে ফোনালাপ বেরিয়ে ওসি বলছেন একজন মন্ত্রী এনেছেন নির্বাচন করিয়ে দেয়ার জন্য।”
তিনি বলেন, “আসুন, আজকে আমরা রুখে দাঁড়াই, এই সরকারকে মানুষকে না বলে দিয়েছে।”
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তালিকা দিয়েছে সাহস জুগিয়েছে। উৎসাহ দিয়েছে। আন্দোলন সফলতার দ্বারপ্রান্তে। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভোট চোরদের ধরার জন্য। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে একজন একজন করে তালিকা করার জন্য। ”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোনো রেজিম ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আমাদের নেতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রক্ত দিয়ে হলেও এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আদায় করার জন্য। তফশিল ঘোষণা করে কোনো লাভ নাই। ভোটের বাক্স গুদামেই পরে থাকবে এদিক সেদিক যাবে না।”
তিনি আরো বলেন, “খালেদা জিয়াকে মৃত্যু দিকে যারা ঠেলে দিচ্ছে তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।”
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, “বিশ্ব নেতাদের পেছনে ঘুরঘুর করছে। সেলফি তুলছে। কোনো লাভ হবে না। এদের দেশেও কেউ নেই, দেশের বাইরেও কেউ নেই। তাদের একমাত্র ভরসার জায়গা হচ্ছে পুলিশ।”
তিনি আরো বলেন, “শুধু সরকারের পতন ঘটালেই হবে না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত রাস্তা থাকবো।”
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।